ছাদকৃষিতেও ঋণ পাওয়া যাবে

নিউজ ডেস্ক

চলতি অর্থবছরে ৩৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে ‘কৃষি ও পল্লী ঋণ’ নীতিমালা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক, যা গত অর্থবছরের চেয়ে ১৩ দশমিক ৬০ শতাংশ বেশি। এবার কৃষি ঋণে নতুন কয়েকটি খাত যুক্ত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে ভেনামি চিংড়ি, কাঁকড়া, কুচিয়া, কালো ধান, এভোকাডো ফল ও পাতি ঘাস চাষেও পাওয়া যাবে কৃষি ঋণ। পাশাপাশি ছাদকৃষিতেও অর্থায়ন করতে পারবে ব্যাংকগুলো।

রোববার (৬ আগস্ট) কৃষি ও পল্লী ঋণ এ নীতিমালা এবং কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এ কে এম সা‌জেদুর রহমান খান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কৃষি ঋণ বিভাগের পরিচালক কা‌নিজ ফা‌তেমা, পরিচালক দেবাশীষ সরকারসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা।

গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৩০ হাজার ৮১১ কোটি টাকার কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্য ঠিক করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক, যা ছিল তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ বেশি। তবে শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা পার করে ৩২ হাজার ৮২৮ কোটি টাকার কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণ হয়েছে বলে জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর একে এম সাজেদুর রহমান খান।

‘কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালা ও কর্মসূচি’ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘সরকারের কৃষিবান্ধব নীতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে টেকসই উন্নয়নের নির্ধারিত লক্ষ্যের দারিদ্র বিমোচন, ক্ষুধা মুক্তি এবং সুস্বাস্থ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে কৃষি ঋণ সরবরাহের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধতে জোর দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে আমদানি বিকল্প শস্য, মসলা ও ফল চাষ বাড়াতে ঋণ বিতরণে নির্দেশনা অব্যাহত রাখা হয়েছে, যাতে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হয়।’

Agri

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট ৩৬ লাখ ১৮ হাজার ৫৪৫ জন গ্রাহক কৃষি ও পল্লী ঋণ নিয়েছেন, যার মধ্যে ১৮ লাখ ৮১ হাজার ৯৩৩ জন নারী। এবার রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর জন্য ১২ হাজার ৩০ কোটি টাকা, বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকের জন্য ২২ হাজার ৯৭০ কোটি টাকার ঋণ বিতরণের লক্ষ্য ধরার কথা জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর মধ্যে ব্যাংকের নিজস্ব নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিতরণ করতে হবে ৫০ শতাংশ ঋণ, যা গতবার ৩০ শতাংশ ছিল।

মৎস্য খাতে লক্ষ্যমাত্রার ন্যূনতম ১৩ শতাংশ ও প্রাণিসম্পদ খাতে লক্ষ্যমাত্রার ন্যূনতম ১৫ শতাংশ কৃষি ঋণ বিতরণের নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পল্লী অঞ্চলে আয়-উৎসারী কর্মকাণ্ডে ঋণের সর্বোচ্চ সীমা বাড়িয়ে পাঁচ লাখ টাকা করার কথাও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। প্রাণিসম্পদ খাতে পশু-পাখি লালনপালনে নিজস্ব জমির পাশাপাশি ইজার নেওয়া জমিতে খামার স্থাপন/পরিচালনার বেলাতেও কৃষি ঋণের সুযোগ খুলে দেয়া হয়েছে এবারের নীতিমালায়।

ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য ব্যাংকগু‌লো‌কে নিজস্ব নেটওয়ার্ক (শাখা, উপশাখা, এজেন্ট ব্যাংকিং, কন্ট্রাক্ট ফার্মিং, দলবদ্ধ ঋণ বিতরণ) এবং ব্যাংক-এমএফআই লিংকেজ ব্যবহার করতে পারবে। এক্ষেত্রে ব্যাংকের নিজস্ব নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ লক্ষ্যমাত্রার ন্যূনতম ৫০ শতাংশ হতে হবে। আগে তা ছিল ৩০ শতাংশ।

নতুন কৃষকদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ঋণ বিতরণ কর‌তে হ‌বে। পল্লি অঞ্চলে আয়-উৎসারী কর্মকাণ্ডে ঋণের সর্বোচ্চ সীমা হ‌বে ৫ লাখ টাকা। ছাদ কৃষিতে অর্থায়ন কর‌তে পার‌বে ব্যাংক। অর্থাৎ বা‌ড়ির ছা‌দে বাগান কর‌তে ঋণ পা‌বেন গ্রাহক।

এই প্রবন্ধটি শেয়ার করুন
১ টি মন্তব্য