

গ্রাহকসেবার মান না বাড়ানোর অভিযোগে দেশের সর্ববৃহৎ মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোনের সিম বিক্রির ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন-বিটিআরসি । প্রথমে গ্রামীণফোনকে কোনো ধরনের নতুন সিম বিক্রি করতে পারবে না বলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। পরে গ্রামীণফোনের অনুরোধে ১৩ লাখ অব্যবহৃত সিম বিক্রির সুযোগ দিয়েছিল বিটিআরসি । কিন্তু আজ সেই সুযোগও বাদ করা হলো। ফলে গ্রামীণফোন নতুন-পুরনো কোনো ধরনের সিমই বিক্রি করতে পারবে না।
রোববার (৬ নভেম্বর) বিকেলে কমিশন সূত্রে এই তথ্য জানা যায়। বিটিআরসির প্রতিবেদন মতে, গ্রামীণফোনের বর্তমান গ্রাহক সংখ্যা (২০২২ সালের মে পর্যন্ত) আট কোটি ৪৯ লাখ ৫০ হাজার। এই বিপুলসংখ্যক ব্যবহারকারী থাকার পরেও অপারেটরটির বিরুদ্ধে বারবার অভিযোগ এসেছে, তারা বিটিআরসি থেকে যে স্প্রেকট্রাম বরাদ্দ নিয়েছে তা অপর্যাপ্ত ছিল। এছাড়াও ঘনঘন কল ড্রপ, ফোরজি কভারেজ বৃদ্ধি না করা, বিটিআরসির পাওনা না মিটানো সহ অপারেটটির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করেছে বিটিআরসি ।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আমরা চেষ্টা করেও গ্রামীণফোনের সেবার মান ভালো করার কোনো উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি। তারা গ্রাহক বাড়াবে, কিন্তু সেবার মান বাড়াবে না- এটা কোন মতেই হতে দেওয়া যাবে না। যতদিন না তারা সেবার মান উন্নতি করবে এবং তা সন্তোষজনক পর্যায়ে উন্নীত না হবে ততদিন গ্রামীণফোনের সিম বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে।
গ্রামীণফোনের সিম বিক্রির নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল গত ২৯ জুন। গ্রামীণফোনকে দেওয়া বিটিআরসির চিঠিতে জানানো হয়েছিল, বিটিআরসির পরীক্ষায় গ্রামীণফোনের সেবার মান সন্তোষজনক দেখা যায়নি। তাই প্রতিষ্ঠানটির সিম বিক্রি করার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এদিকে আজ রোববার (৬ নভেম্বর) মোবাইল ফোন অপারেটররা কী মানের সেবা দিচ্ছেন তা যাচাইয়ে অত্যাধুনিক কিউওএস বেঞ্চমার্কিং সিস্টেম চালু করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন-বিটিআরসি।
বিটিআরসি কার্যালয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এই সিস্টেমের উদ্বোধন ঘোষনা করেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, বাংলাদেশে প্রথম দিকে কিছু মানুষের জন্য মোবাইল হ্যান্ডসেট ব্যবহারের সুযোগ থাকলেও বর্তমানে সময়ে ঘরে ঘরে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী রয়েছে। গ্রাহক বৃদ্ধি সাময়িক ব্যবসার হাতিয়ার হলেও দীর্ঘমেয়াদী ও টেকসই ব্যবসার জন্য গ্রাহকের সুযোগ সুবিধা গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবর্তিত প্রযুক্তির এই যুগে সেবার মানের দিকে নজর না দিলে গ্রাহক ধরে রাখা কঠিন হয়ে যাবে। এমএনপি চালু হওয়ায় নাম্বার ঠিক রেখে অপারেটর বদলানোর সুযোগ রয়েছে, তবে কোনো মোবাইল অপারেটরের গ্রাহক সেবার মান সন্তোষজনক নয়।