বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে ডিজেলেই ফিরল সরকার


ডলার–সংকটের কারণে গত জুলাইয়ে খোলাবাজার থেকে তরলীকৃত গ্যাস (এলএনজি) আমদানি বন্ধ করে সরকার। আর জ্বালানি তেল আমদানি কমাতে বন্ধ করা হয় ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোও। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ায় লোডশেডিং বেড়ে যায় সারা দেশে। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পর এখন আবার তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে উৎপাদন বাড়াচ্ছে সরকার।
তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গ্যাস, কয়লা, ফার্নেস ও ডিজেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যয়বহুল ডিজেল থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা। সবচেয়ে কম খরচ গ্যাসে। কিন্তু আমদানিনির্ভরতায় ঝুঁকে গ্যাসের সরবরাহ কমেছে। তাই বাধ্য হয়ে তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র বেশি চালাতে হচ্ছে। এতে পিডিবির উৎপাদন খরচ বাড়বে। সরকারের ভর্তুকির ওপর চাপ তৈরি হবে। চাপ সামলাতে বাড়তে পারে বিদ্যুতের দাম।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) সূত্র বলছে, বর্তমানে ডিজেল থেকে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ হয় গড়ে প্রায় ২৫ টাকা। ফার্নেস থেকে উৎপাদন খরচ প্রায় ১৫ টাকা। আর গ্যাস থেকে প্রতি ইউনিট উৎপাদন খরচ গড়ে ৪ টাকা। তবে সব মিলিয়ে পিডিবির গড় উৎপাদন খরচ এখন ৯ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
পিডিবি ও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) সূত্র বলছে, খরার কারণে আমন চাষে সেচের ব্যবহার বেড়েছে। তাপমাত্রাও কমছে না। তাই বিদ্যুতের বাড়তি চাহিদা পূরণে ইতিমধ্যেই চালু করা হয়েছে ডিজেলচালিত সব বিদ্যুৎকেন্দ্র। স্বাভাবিক সময়ের চেয়েও এখন বেশি হারে চালানো হচ্ছে এসব কেন্দ্র। এতে হঠাৎ করেই পিডিবি থেকে ৯ গুণ বাড়তি ডিজেল সরবরাহের চাহিদা পেয়েছে বিপিসি। একই সময়ে বিদ্যুৎ খাতে ফার্নেস তেলের চাহিদাও দ্বিগুণ হয়েছে।
২০২২ সালের জন্য প্রতি মাসের জ্বালানি তেলের চাহিদা জানিয়ে পিডিবি গত বছরের অক্টোবরে বিপিসিকে চিঠি দেয়। এ হিসাবে আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত তিন মাসে ডিজেলের চাহিদা ছিল ৪২ হাজার টন। পুরো বছরের জন্য এই চাহিদা ১ লাখ ৭৮ হাজার টন। এখন তিন মাসের জন্য পিডিবির ডিজেলের চাহিদা দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৯১ হাজার টন। আর ফার্নেস তেলের তিন মাসের চাহিদা ১ লাখ ৪৬ হাজার টনের পরিবর্তে করা হয়েছে ২ লাখ ৯১ হাজার টন।
‘